তাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে, ফুলির চোখ পড়েছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ওপর। তারা যে কানাকানি করে কথা বলছিল, ব্যাঙ্গাত্তক হাসি তামাশা করছিল। যেন সব দোষ ফুলির। লজ্জায় কারও দিকে তাকাতেও ভয় করে।
তারপর ইঞ্জিন চালিত গাড়ীর প্রচন্ড শব্দ। আরও এলোমেলো কিছু মুহূর্ত। কিছুক্ষণ পর, সাদা এপ্রোন পড়া একজন ডাক্তার এসে তার হাত ধরেছে। মনে আছে শুধু এটুকুই। ডাক্তার নার্সকে সাথে নিয়ে, ফুলি বেগমকে পরীক্ষা করলেন।
ভ’য়াব’হ রকমের পে’রিনিয়াল টি’য়ার তখনও র’ক্ত’ যাচ্ছে প্রচুর। হাতে পালস দেখা হল। খুবই কম। জরুরি ভিক্তিতে রো’গীকে র’ক্ত দেয়া দরকার। জরুরি অবস্থায় অপা’রেশন করে ছিঁড়ে যাওয়া অংশ ঠিক করতে হবে।
রিলিজ নিয়ে ফুলিকে বাসায় নেয়া হল। আরও বেশি অসু’স্থ হওয়ায় চারদিন পরে আবার হা’সপা’তালে ভর্তি করা হল। পরদিন ভোর ভোর সময়। একবার চোখ খুলে আবার বন্ধ করলো ফুলি। সেই বন্ধ শেষ বন্ধ।
এই সমাজের প্রতি ঘৃনায় চোখ জ্বল জ্বল করছিল কি না কেউ দেখতে পারেনি। ভোরের স্বল্প আলোয় বিদায় জানালো জীবনের নিষ্ঠুরতাকে!ফুলি ‘একিউট রেনাল ফেইলরে’ মারা গেছে। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ডায়ালাইসিসের জন্য বলা হয়েছিল, তারা রোগী নিয়ে এত ঝামেলা করতে পারবে না। আরও পড়ুন : স্যারগো এক বছর মুরগির মাংস-পোলাও খাইনি আমি
এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এসে ৯০ উর্ধ্ব এক বৃদ্ধ বলল, স্যার আমি এক বছর ধরে মুরগির মাংস-পোলাও খাইনি। এ কথা শুনে সালাম দিয়ে তার সামনের চেয়ারটিতে বসিয়ে বলেন, চাচা আপনি একটু সময় অপেক্ষা করুন।
আমি ব্যবস্থা করছি। তিনি তাৎক্ষণিক অফিসের কেরানীকে নির্দেশ দিলেন আপনি মুরগি এবং পোলাও চাল ও কিছু তরকারি নিয়ে আসুন। বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে এমন ঘটনা ঘটে।
সুত্র জানায়, দুপুরের দিকে ৯০ উর্ধ্ব বয়সী এক বৃদ্ধ অফিসে এসে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এসে বলল স্যার আমি এক বছর ধরে মুরগির মাংস পোলাও খাইনি। তিনি সাথে সাথে অফিসের কেরানীকে মুরগি, পোলাউ চাল ও কিছু বাজার করে আনতে বলেন
বাজার করে আনার পর তিনি নিজের হাতে বৃদ্ধের কাছে বাজার বুজিয়ে দিয়ে তিনি নিজে অফিস থেকে নেমে রিকসায় উঠিয়ে দেন। এ সময় বৃদ্ধ আনন্দে কেঁদে দেন এবং তার জন্য দোয়া করে বলেন, আপনার এই ভালোবাসা আজীবন মনে রাখব।
ত্রিশালের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি তার কথা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। এমন হাজারও মা বাবা এভাবে দিন কাটাচ্ছেন। আমি একজন বাবার এতটুকু উপকার করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। তিনি সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের পাশে দাড়ানোর আহব্বান জানান।