আজ দুপুর ২ টোয় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) হলদিয়ায় নন্দীগ্রামের (Nandigram) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র (Nomination) জমা দেবেন। পুরীর মন্দিরের দৈতাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে। খনার বচন বলে, “মঙ্গলের ঊষা বুধে পা, যথা ইচ্ছা তথা যা”, এই ধারণায় ভিত্তি করেই তৃণমূল সুপ্রিমোকে বুধবার দুপুর ২ টোর পর সময় বেছে দেওয়া হয়েছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য। শুধু তাই নয়, আজই দুপুর একটা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত পুরীর মন্দিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে অখণ্ডদীপ পুজো দেওয়া হবে। অখণ্ডদীপ পুজো সম্পন্ন করলে সব গ্রহ তুষ্ট হয়। তারপর কোনও কাজে নামলে জয় নিশ্চিত, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে এই অখণ্ডদীপ পুজো দেওয়া হচ্ছে।
নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবারই পৌছে গিয়েছেন। সেখানে চন্ডী মন্দিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো দিয়েছেন। কর্মীসভাও করেছেন। আজ নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন হলদিয়ায় মনোনয়ন জমা দিতে।
এবার রাজ্যরাজনীর নির্বাচন কেন্দ্রের শিরোনামে রয়েছে নন্দীগ্রাম। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের বিধানসভা নির্বাচনের(Assembly Election) প্রার্থী। তিনি তাঁর বহুদিনের কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে এবার নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছেন। মঙ্গলবার কর্মীসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এখানের ভোট পয়লা এপ্রিল। বিজেপিকে এপ্রিল ফুল করে দিন।” তৃণমূল সুপ্রিমো আরও বলেছেন, “খেলা হবে, দেখা হবে, জেতা হবে। কী হবে তো?” তখন উপস্থিত জনতার পক্ষ থেকে তীব্রস্বরে আওয়াজ এসেছে, “হ্যাঁ”।
এবার নন্দীগ্রাম রাজ্যের “টাফ সিট”। এখানে একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যদিকে তাঁরই একদা শিষ্য, যিনি গত লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে রাজ্য থেকে উৎখাতের ডাক দিয়েছিলেন সেই শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikry) মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী। আজ শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, ” বাংলা থেকে তৃণমূল (TMC) নামক প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিকে উৎখাত করতে হবে।” পাশাপাশি তিনি এটাও বলছেন, “আমি ২১ বছর তৃণমূল দলটা করেছি। ওখানে কেউ সম্মান নিয়ে থাকতে পারেন না। ওটা এখন রাজনৈতিক দল নেই। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হয়ে গেছে।” শুভেন্দু অধিকারী এবার নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি (BJP) প্রার্থী।
শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা, গ্রহণযেগ্যতা নিয়ে নন্দীগ্রামে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উস্কে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা আবু তাহের। তিনি বলেছেন, “শুভেন্দু অধিকারীর এই বোধটা আগে জাগ্রত হলে ভালো হত।” এই জেলার আর এক তৃণমূল নেতা ও রামনগর বিধানসভার বিদায়ী বিধায়ক অখিল গিরি বলেছেন, “শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন তিনি নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র। তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে তারকার হাত ধরতে হচ্ছে কেন? শুনছি মিঠুন চক্রবর্তী ১২ ফেব্রুয়ারি শুভেন্দুর হয়ে প্রচার করবেন। মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় মিছিল করবেন স্মৃতি ইরানি, ধর্মেন্দ্র প্রধানের মতো দুই কেন্দ্রীয়মন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু নিজেই নন্দীগ্রামের প্রার্থী, নিজেই নিজের প্রচারক। আর তাঁর সঙ্গে আছেন অগনিত জনতা।”
কে ভূমিপুত্র, কে বহিরাগত এই চর্চা চলতে চলতেই নির্বাচনের দিন এসে যাবে। মানুষ তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে নন্দীগ্রামে ভোট দেবেন। ২ মে ইভিএম প্রমাণ করবে নন্দীগ্রাম কাকে গ্রহণ করলো বাংলার মেয়েকে না ভূমিপুত্রকে। কেননা নন্দীগ্রামে পোস্টের পড়েছে, নন্দীগ্রাম বহিরাগত নয় ভূমিপুত্রকেই চায়।