Thursday , June 8 2023

এবার ২৩৪ আসনের তালিকা একসঙ্গে, সপ্তাহান্তে ঘোষণার ভাবনা বিজেপি-র

নীলবাড়ির লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত প্রথম দু’দফার প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি। তা-ও তিন দফায়। প্রথম দু’দফায় মোট ৬০টি আসনে ভোটগ্রহণ। পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি আসন শরিক দল আরসু-কে ছেড়ে গত শনিবার ৫৬টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল বিজেপি। এর পর পুরুলিয়ার কাশীপুরের প্রার্থীর নাম কয়েকদিন পরে ঘোষণা করা হয়। বাকি খড়্গপুর সদর ও বাঁকুড়ার বড়জোড়ার প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়েছে বুধবার।

তবে এর পর আর তেমন করতে চাইছে না রাজ্য বিজেপি। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বাকি ২৩৪ আসনের তালিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বৈঠক। দলের নির্বাচনী কমিটির সদস্যরা কলকাতায় হেস্টিংসে বিজেপি-র প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছেন। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, যত রাতই হোক, তালিকা সম্পূর্ণ করতে চায় নির্বাচনী কমিটি। একান্ত না হলে শুক্রবারও হবে বৈঠক। যদিও বৈঠক করলেও প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করার ক্ষমতা নেই এই কমিটির। তাই শুক্রবারই রাজ্য নেতারা তালিকা নিয়ে দিল্লি পাড়ি দেবেন। সেখানে জেপি নড্ডা, অমিত শাহ তালিকা চূড়ান্ত করতে বসবেন। গেরুয়া শিবিরের নিয়ম অনুযায়ী তা যাবে দলের সংসদীয় কমিটিতে। সেখানে থাকতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এর পরেই ঘোষণা করা হবে তালিকা। রাজ্য বিজেপি নেতারা চাইছেন সপ্তাহান্তে শনি বা রবিবার তালিকা ঘোষণা করতে। কারণ, শুক্রবার থেকে তৃতীয় দফার মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় শুরু। শেষ দিন ১৯ মার্চ।

তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ রয়েছে হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ৩১টি আসনে। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই ১৬টি আসন। ওই জেলায় গত লোকসভা নির্বাচনে সব আসনেই পিছিয়ে ছিল বিজেপি। তাই এখানে এ বার বিজেপি শক্তি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ওই দফায় হাওড়ার সাতটি এবং হুগলির আটটি আসনে ভোটগ্রহণ রয়েছে। হুগলির যে যে আসনগুলিতে ভোট রয়েছে, সেখানে লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে অনেকগুলিতেই বিজেপি ‘সুবিধাজনক’ জায়গায় রয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, এই আসনগুলির প্রার্থিতালিকা তৈরি করতে বেশ বেগ পেতে হবে দলকে। কারণ, ওই সব আসনগুলিতে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অনেকে। এক একটি আসনে গড়ে আটটি করে নাম রয়েছে।

নন্দীগ্রামের পাশাপাশি কি টালিগঞ্জ আসন থেকেও লড়ার কথা চিন্তা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ রয়েছে হাওড়া এবং হুগলিতে। হাওড়ার ডোমজুড় আসনে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা হয় কি না, সেদিকে নজর থাকবে। যদিও বিজেপি সূত্রে খবর, রাজীব ডোমজুড়েই প্রার্থী হতে পারেন। তবে বালি আসনে তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে প্রার্থী করা নিয়ে এখনও দ্বিমত রয়েছে গেরুয়া শিবিরে। যদিও বৈশালী জানিয়েছেন, তিনি বালি থেকেই নির্বাচনে লড়তে চান। একই ভাবে নজরে থাকবে হুগলির উত্তরপাড়া কেন্দ্র। সেখানকার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষালও এখন বিজেপি-তে। চতুর্থ দফায় আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় যথক্রমে পাঁচটি এবং ন’টি আসনে ভোটগ্রহণ। এর মধ্যে আবার নজরে থাকবে মাদারিহাট কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রে ২০১৬ সালেই জয় পেয়েছিলেন বিজেপি-র মনোজ টিগ্গা। সেখানে তাঁকেই ফের প্রার্থী করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

পঞ্চম দফায় উত্তর ও দক্ষিণ দুই বাংলাতেই রয়েছে ভোটগ্রহণ। উত্তরে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং দক্ষিণে নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান ও উত্তর ২৪ পরগনায় ভোটগ্রহণ রয়েছে। পাহাড়ে এ বার বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে জোট নেই বিজেপি-র। উল্টে মোর্চাকে তিনটি আসন ছেড়েছে তৃণমূল। সেখানে বিজেপি কাকে প্রার্থী করে, সে দিকেও নজর থাকবে রাজ্য রাজনীতির। বাকি তিন দফায় দুই দিনাজপুর ও মালদহ ছাড়া সব আসনই দক্ষিণবঙ্গে। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সেই সব আসনে জয়ীরা মন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে। সেই সব আসনে বিজেপি কাদের প্রার্থী করবে সে দিকেও নজর থাকবে। তবে রাজ্য নেতারা যাঁদেরই তালিকা বানান, সেটি চূড়ান্ত করবেন অমিত। আর তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, কোন তালিকায় কার নাম রয়েছে তা নয়, গুরুত্ব দেওয়া হবে শুধু সেই প্রার্থীদের, যাঁদের সংশ্লিষ্ট আসনে জেতার সম্ভাবনা আছে।

About M

Check Also

প্রার্থী না হয়েও যেভাবে জিতলেন মমতার ভাইপো অভিষেক

বিজেপির বড় বড় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে হাত ধরাধরি করে লড়াই করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভাইপো অভিষেক …