প্রবল শীত প্রাণ কেড়েছিল বেশ কয়েকজন কৃষকের। তাই গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহে যাতে কোনো কৃষকের প্রাণ বলি দিতে না হয় তার জন্যে গ্রীষ্মকাল শুরুর পূর্বে সিংঘু সীমান্তে দুতালা বাড়ি বানানোর সিদ্ধান্ত নিল আন্দোলনকারী কৃষকরা। শুধু বাড়িই নয়, বাড়ির মধ্যে থাকবে এসির ব্যবস্থাও। আন্দোলনকারী কৃষকদের দাবি ঠান্ডা ঘরে থেকে আর এক ঠান্ডা ঘরের মানুষদের সঙ্গে লড়াই করার প্রস্তুতি।
কৃষক নেতার দাবি, ৬০ফুট বাই ২০ ফুট জমির উপর তৈরী হবে এই বাড়ি। যার মধ্যে ১০০ জন কৃষক থাকতে পারবেন। বাড়িটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হবে বলে জানা গিয়েছে। এবং সরকারি জমির উপর তৈরী হবে আন্দোলনরত কৃষকদের জন্যে এই বাড়ি। পাকা ছাদের বদলে থাকবে কাঠের ছাদ। বাড়িটির নিচের তলায় চারটি ঘর থাকবে এবং দুতলায় হল ঘর থাকবে। সম্পূর্ণ বাড়িটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হবে। ইতিমধ্যেই বিদ্যুত সংযোগের জন্যে আবেদন জানানো হয়েছে। যদি সেক্ষত্রে কোনো বাঁধা আসে তাহলে জেনারেটরের মাধ্যমে কাজ চালানো হবে।
বাড়ি তৈরী করার সিদ্ধান্তের আগেই অনেক প্রতিবাদকারী কৃষকরা গ্রীষ্মের মরসুমে থাকার জন্যে তাদের ট্রলিগুলি পুনর্নির্মাণ করে নিয়েছে এবং প্রত্যেকটি ট্রলিতে এয়ারকন্ডিশনারের ব্যবস্থাও করে নিয়েছে।
কৃষক নেতা মনজিৎ সিং জানিয়েছে, ‘আমরা শীতের সময় অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। দিনের পর দিন গরম পড়ছে। গরম পড়তেই মশার উপদ্রবও বাড়ছে। ফলে মশাজনিত নানা রোগেরও উপদ্রব বাড়ছে।তাই সিংঘু সীমান্তে থাকা আন্দোলনরত কৃষকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করতে আমরা বাড়ি তৈরী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত বুধবার থেকে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ হলেই আমরা সেই বাড়িতে থাকতে শুরু করবো।
বিতর্কিত তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকদের এই আন্দোলন ১০০ দিন অতিক্রান্ত করেছে। এখনো পর্যন্ত অনড় কেন্দ্রীয় সরকার। অপরদিকে কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত কেন্দ্রীয় সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে আন্দোলন প্রত্যাহার হলেই কৃষকরা বাড়ি যাবে। ইতিমধ্যে এগারো বার বিজেপি সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে আন্দোলনরত কৃষকরা। কিন্তু কোনো রফাসূত্র বের হয়নি বরং ১২থেকে ১৮ মাস নতুন কৃষি আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলো। তবে তা মানতে নারাজ কৃষকরা। তাদের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, দাবি না মানলে আন্দোলন চলতে থাকবে।
২৬শে মার্চ কৃষক বিক্ষোভ চার মাস পূর্ণ করবে। সেই দিনকে সামনে রেখে দেশজোড়া বিক্ষোভ ও বনধের ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো। কৃষক নেতা বুটা সিং বুর্জগিল জানান ভারত বনধের পাশাপাশি, ১৫ই মার্চ দেশ জোড়া বিক্ষোভেও সামিল হবেন কৃষক নেতারা। তাদের দাবি পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে উদাসীন কেন্দ্র। অবিলম্বে দাম কমাতে হবে। এরই সঙ্গে সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে তারা।