আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সুপার হেভিওয়েট প্রচার নিয়ে তুমুল ব্যস্ত জেলা বিজেপি। আর তৃণমূল কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট মরিয়া তাদের গতবারের পাওয়া আসন ধরে রেখে পরবর্তী লক্ষ্যে।
নবান্ন অভিযানে বাম যুব সংগঠনের কর্মী মইদুল মিদ্যার উপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও পরে তার মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক হয়েছে। কোতুলপুরের বাসিন্দা মইদুলের পরিবারকে চাকরি দিয়েছে বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। সরকারি রিপোর্টে মইদুলের মৃত্যুর কারণ নিয়েও চলছে বিতর্ক।
বাম যুব কর্মীর মৃত্যুর জেরে রাজ্য হয়েছিল উত্তাল। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনা জেলার অন্যতম রাজনৈতিক ইস্যু। প্রথম দু’দফায় আগামী ২৭ মার্চ ও ১ এপ্রিল বাঁকুড়া জেলার ১২ কেন্দ্রে ভোট।
গত ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে এই জেলায় বিজেপির রমরমা ছিল। সেই ফল ধরে রেখেই বিধানসভায় ঝাঁপাতে মরিয়া বিজেপি। সেই কারনেই দেশের তাবড় বিজেপি নেতাদের এনে চমক দিতে চাইছেন তারা। সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি ও সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, আগামী ১৫ মার্চ রানীবাঁধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্ সভা করবেন। ১৬ মার্চ আসছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ১৭ মার্চ বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি সভা করবেন শালতোড়ায়।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ মার্চ সভা করতে আসতে পারেন বলে তিনি জানান।
লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ও বাম শিবিরের বিরাট ধাক্কা লাগে বাঁকুড়ায়। বিধানসভা নির্বাচনে গতবার জয়ী হওয়া আসনগুলি ধরে রেখে দুই শিবির নেমে পড়েছে পরবর্তী লক্ষ্যে। জেলায় ত্রিমুখী লড়াই দেখার সম্ভাবনা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে ঘিরে বিদায়ী বিধায়ক শম্পা দরিপার অবস্থানে বিব্রত শাসক দল। তবে জটিলতা কাটানো গেছে বলেই দাবি করছেন জেলা নেতৃত্ব। অভিনেত্রী সায়ন্তিকা প্রার্থী হয়ে প্রচার শুরু করেছেন। গতবার জেতা বাকি আসনগুলি ধরে রাখতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল শিবির।
বাম জমানার ‘লাল দূর্গ’ হিসেবে পরিচিত বাঁকুড়ার তালডাংরা বিধানসভা কেন্দ্র পূনঃরুদ্ধারে জোরদার প্রচার কর্মসূচীতেও নেমেছে সংযুক্ত মোর্চার বড় শরিক সিপিআইএম। তালডাংরার সিপিআইএম প্রার্থী মনোরঞ্জন পাত্র বলেন, লাল ঝাণ্ডার প্রতি মানুষের বিশ্বাস তৈরী হয়েছে। ২০১৬-র বিধানসভা ও ২০১৯ এর লোকসভা ও তৃণমূলী সন্ত্রাস আর গরীব মানুষের গৃহনির্মাণ, একশো দিনের কাজে ব্যাপক চুরি- দুর্নীতি হয়েছে। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অরুপ চক্রবর্ত্তী এদিন সিমলাপালের তালদা, সাঁইড়ি গ্রামে প্রচার চালান। বাড়ি বাড়ি ঘুরে তিনি মানুষের ‘আশীর্বাদ’ নেন। তিনি বলেন, আমাকে নিয়ে মানুষের ব্যাপক উৎসাহ, তবে প্রতিদ্বন্দী ‘ভালো প্রার্থী’ না পাওয়ার ‘দুঃখ’ তার রয়ে গেলো বলে তিনি দাবি করেন।
সিপিআইএম প্রার্থী মনোরঞ্জন পাত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনি অনেক দিনের রাজনীতিক, ‘ভালো মানুষ’। তবে তাঁর আমলে মানুষের চাষ বন্ধ, জমি বর্গা করে নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি কারণে মানুষ বামেদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বামেদের প্রভাব নেই, সব ভোট বিজেপিতে গেছে। ওই ভোট বামেরা ফেরাতে পারলে বিজেপি কুপোকাত হয়ে যাবে বলে তিনি দাবি করেন।