এ যেন ঠিক চাকরির কোম্পানি বদলের মতো। নতুন নতুন কিছু কোম্পানিতে ওপেনিং চালু হয়েছে। এক কোম্পানিতে কাজ করতে করতে এবার একটা পরিবর্তন দরকার সিভিতে। অতএব হাওয়া বদল করে নতুন কোম্পানিতে চলে যাও। একটু ‘পোস্ট’, ‘স্যলারি’ ঠিকঠাক থাকলেই হবে। তবে এই কোম্পানি রাজনৈতিক দল। তাই ইন্টারভিউইয়ের বিশেষ বালাই নেই। যে আসবে দল ভরাতে তাকেই সাদরে গ্রহন। এতদিন শুধু প্রাক্তন কোম্পানি তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ‘নতুন’ কোম্পানিতে বিজেপিতে যাচ্ছিলেন। যারা ওই সংস্থায় পেলেন না ‘চাকরি’ তারা এবার একদম নতুন ‘কোম্পানি’ আইএসএফেও যেতে শুরু করেছেন। দল বদলে ভাইজানের সঙ্গী হলেন হাওড়ার আব্বাসউদ্দীন খান।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে দীর্ঘ কয়েক দশকের সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন এই নেতা। ভাইজানের আইএসএফে যোগ দিয়েছেন উলুবেড়িয়া পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তথা হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সদ্য ‘প্রাক্তন’ সহ-সভাপতি আব্বাসউদ্দীন খান। শনিবার তাঁর হাতে আইএসএফের পতাকা তুলে দেন নবগঠিত দলের সভাপতি শিমুল সোরেন ও চেয়ারম্যান নওসাদ সিদ্দিকী। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা থেকে আইএসএফের হয়ে আব্বাসউদ্দীন খানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কার্যত সময়ের অপেক্ষা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আব্বাসউদ্দীন খান আইএসএফের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভার রাজনৈতিক সমীকরণে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রে একটা বড় অংশের সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। আর সেটাই অন্যতম হাতিয়ার ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা আব্বাসউদ্দীন খানের। আর তাতেই বাজিমাত করতে পারেন সদ্য তৃণমূল ত্যাগী গ্রামীণ হাওড়ার এই নেতা। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আব্বাসউদ্দীন খান জানান,”মানুষের সেবা করতে গেলে রাজনৈতিক মঞ্চ প্রয়োজন। তাই রাজনীতির মঞ্চেই থাকছি।”
উল্লেখ্য, উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে আব্বাসউদ্দীন খানকে টিকিট দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের কর্মীরা। যদিও, তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি। প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসুকে উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আব্বাসউদ্দীন খানের অনুগামীরা। শনিবার একটি ভিডিও বার্তার মধ্য দিয়ে তিনি দলের সমস্ত পদ ও সর্বোপরি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন।