তৃণমূল-বিজেপি-র রাজনৈতিক বাইনারি ভেঙে সংযুক্ত মোর্চা রাজনৈতিক ভাবে এগোচ্ছে। বামফ্রন্টর ইস্তাহার প্রকাশ করতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তথা সংযুক্ত মোর্চার প্রধান কান্ডারি বিমান বসু। শরিক দলের নেতাদের পাশে বসিয়ে বিমানবাবুর এই মন্তব্য প্রথম দফার নির্বাচনের সাতদিন আগে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কেননা বিমান বসু যখন বলছেন তৃণমূল, বিজেপির রাজনৈতিক বাইনারি ভেঙে যাচ্ছে ঠিক তখনি বিভিন্ন সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “বাং বন্ধুদের বলছি, সিপিএমকে বটে দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না। সিপিএম ভোট পাবে না। আপনাদের ভোটটা তৃণমূলকে দিন।” যে সিপিএমকে দূরবীন দিয়ে দেখতে হয় বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আকছার বলতেন,, সেই সিপিএম তথা বাম বন্ধুদের কাছে কেন তিনি এখন ভোট চাইছেন? তবে কী তিনিও বুঝেছেন রাজ্যে বাম শক্তির নাম তিনি যা বলতেন সেটা ঠিক নয়? এই প্রশ্ন মমতার মন্তব্যের পর বাম নেতৃত্ব তুলেছে। বিমান বসু জানিয়েছেন, “বামফ্রন্টের ইস্তাহারের পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চার একটি যৌথ আবেদন প্রকাশ হবে।” যদিও আগেই বোমান বসু এই কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন।
বিমান বসু ইস্তাহার প্রকাশ্যের সময় জানিয়েকজেন, “আমরা যখন খসড়া ইস্তাহার প্রকাশ করি তখন সেই ইস্তাহারের প্রতি সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিশিষ্ট মানুষদের ‘ইতিবাচক’ প্রতিক্রিয়া আমরা পেয়েছি। আমরা কাজের বিষয়টা আমাদের ইস্তাহারে গুরুত্ব দিয়েছি। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের বিলে ভর্তুকির পরিমাণ নির্দিষ্ট করার বিষয়ে।”
বিমানবাবু বলেছেন, “সংবাদ মাধ্যমে এমন ভাবে প্রচার হচ্ছে দেখে মনে হচ্ছে শুধু তৃণমূল , বিজেপি_ প্রচারে আছে। আমরা প্রচারে মানুষের কাছে গিয়ে বুঝতে পারছি ওদের দ্বিমেরু তত্ত্ব কাজে লাগছে না।”
কী রয়েছে বামফ্রন্টের ইস্তাহারে?
* এক বছরের মধ্যে সরকারি, আধা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে নিয়োগ সম্পূর্ণ হবে
* নিয়মিত এসএসসি, পিএসসি পরীক্ষা চালু
* ২১ হাজার টাকা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি করতে হ্বরে
* ১০০ দিনের কাজ বৃদ্ধি করে ১৫০দিনে বৃদ্ধি
* ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিলে ভর্তুকি চালু
* দরিদ্র পরিবারে দু’টাকা কেজি দরে চাল বা আটা এবং পরিবার পিছু প্রতি মাসে ৩৫ কেজি করে সরবরাহ
* সিএএ , এনআরসি চালু করা হবে না
* অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পুনরুজ্জীবন
* শিক্ষায় ২০% বাজেট বৃদ্ধি
* নারী নির্যাতন , গার্হস্থ্য হিংসা গ্রাম, শহরে বিশেষ সহায়তা কেন্দ্র তৈরী
* কেন্দ্রীয় কৃষি আইন কার্যকর হবে না
* কৃষি বিপণনে রাজ্যের আইন বাতিল করা হবে
তবে সবটাই নির্ভির করছে সংযুক্ত মোর্চা রাজ্যে ক্ষমতায় আসার ওপর। তবে যে সমস্ত বিষয়গুলি ইস্তাহারে তুলে ধরেছে বামফ্রন্ট এক কথায় তার সবটাই জনমুখী।