Thursday , June 8 2023

নন্দীগ্রামের নির্বাচনের আগের দিন বিজেপি বিরোধী শক্তিকে এক করতে মমতার বার্তা

আবার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দেশের অবিজেপি নেতাদের একজোট করার চেষ্টা শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন ধরেই করেই এই কাজ তিনি করে আসছেন । তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাজ্যের ভোটপ্রক্রিয়া চলাকালীন আরও একবার সেই প্রক্রিয়া শুরু কেন করলেন তৃণমূলনেত্রী সেটাই বড় প্রশ্ন। গত ২৮ মার্চ বিজেপি বিরোধী সব নেতানেত্রীকে চিঠি লিখে মমতা দাবি করলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার স্বৈরাচারী শাসন চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। অবিজেপি রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে।এর বিরুদ্ধে সবাইকে সরব হতে তিনি আহ্বান জানান। মমতার এই চিঠি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

২৮ মার্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চিঠি নন্দীগ্রামের ভোটের ঠিক আগের দিন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার, ডিএমকে সুপ্রিমো এমকে স্ট্যালিন, সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুখ আবদুল্লাহ, পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি এবং সিপিআইএম লিবারেশনের নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের কাছে পৌঁছেছে। রাজ্যের ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীনই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া এবং বাম নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের কাছে মমতার এই চিঠি যাওয়াটা আলাদাভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কেউ কেউ বলছেন তাহলে কী প্রয়োজন হলে নির্বাচনের পরে রাজ্যে বিজেপিকে রুখতে তৃণমূল, কংগ্রেস, বাম একত্রে সরকার গোড়ার দিকে এগোচ্ছে?

অবিজেপি নেতাদের লেখা ওই চিঠিতে তৃণমূলনেত্রী দাবি করেছেন, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশের গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর একের পর এক হামলা করে চলেছে। একের পর এক রাজ্যে অবিজেপি সরকারকে সমস্যায় ফেলা হচ্ছে রাজ্যপালের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে। রাজ্যপালরা বিজেপির পদাধিকারীদের মতো কাজ করছেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নির্লজ্জের মতো ইডি-সিবিআই-সহ কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অপব্যাবহার করছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ুতে ডিএমকে এবং তৃণমূলনেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে।” মমতার দাবি, “বিজেপি অসীম ক্ষমতা নিয়ে বিরোধী দলগুলিকে বেসামাল করার চেষ্টা করছে বিজেপি। আজ কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক এমন এক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, যা এই দেশে আগে কখনও হয়নি। আর এই সব কিছুরই একটিই উদ্দেশ্যে। বিজেপি চায়, বিরোধী দলগুলি যাতে কোনওভাবেই নিজেদের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করতে না পারে। তাই আমার মনে হয়, সময় এসে গিয়েছে বিজেপির এই সংবিধানের উপর আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। আমি তৃণমূলের চেয়ারপার্সন হিসেবে আপনাদের সঙ্গে যৌথভাবে লড়াই করতে চাইছি। এবং ভারতবাসীর কাছে একটা বিকল্প তুলে ধরতে চাইছি।”

এখন প্রশ্ন হলো, রাজ্যে যদি নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় কোনও ডলই একক শক্তিতে সরকার গর্তে পারছে না তখন কী তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন চাইবে? কংগ্রেস কী তখন সংযুক্ত মোর্চা ছেড়ে বেরিয়ে তৃণমূলকে সমর্থন দেবে? সে ক্ষেত্রে বামেরা কী কংগ্রেসের পাশে থাকবে? কেননা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে এই চিঠি দেননি। তবে সোনিয়া গান্ধীর কাছে তিনি বিজেপি বিরোধী মঞ্চে লড়াইয়ের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

About M

Check Also

প্রার্থী না হয়েও যেভাবে জিতলেন মমতার ভাইপো অভিষেক

বিজেপির বড় বড় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে হাত ধরাধরি করে লড়াই করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভাইপো অভিষেক …