কখনও গুড় বাতাসা আবার কখনও পাচন বা চড়াম চড়াম। সর্বদাই শিরোনামে থাকতে পছন্দ করেন বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তবে ভোটে এলে ওনার মনে আলাদা এক উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। তখন নিজের বচরের ধরণ পালটে দিয়ে আরও আক্রমনাত্বক হয়ে ওঠেন। পঞ্চম দফার নির্বাচনের আগে ওনার বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ওনাকে শোকজ করেছিল কমিশন। কিন্তু তাতেও ওনাকে দমানো যায়নি। উনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, যে যাই করুক না কেন, উনি নিজের মতো করেই থাকবেন।
এবার বীরভূমে ভোটের সময় অশান্তি রুখতে নির্বাচন কমিশন দুঁদে পুলিশ আধিকারিক IPS নগেন্দ্র ত্রিপাঠিকে অনুব্রতর গড়ের দায়িত্ব দিয়েছে। নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি বীরভূমের দায়িত্ব পাওয়ার পর অনুব্রত বাবু বলেন, কমিশন জাকেই পাঠাক না কেন, আগেও যেমন ভোট হয়েছিল এবারও তেমনই হবে। প্ররোচনামূলক মন্তব্যের পর কমিশন ওনাকে শোকজ করেছিল, আর এবার বেনামি সম্পত্তি এবং প্রচুর নগদ টাকার হদিশ পেতেই আয়কর দপ্তর ওনাকে নোটিশ পাঠাল।
অনুব্রত মন্ডলের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ। আর সেই অভিযোগেই অনুব্রত মন্ডলকে নোটিশ আয়কর দফতরের। দাপুটে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে হিসাব বহির্ভূত এবং আয়ের অধিক সম্পত্তি থাকার অভিযোগ রয়েছে। দ্রুত এ সংক্রান্ত নথি চাওয়া হয়েছে তাঁর কাছে। অনুব্রতর পাশাপাশি তাঁর ৪ জন আত্মীয়কেও নোটিস পাঠিয়েছে আয়কর দফতর। যদিও, আয়কর দপ্তরের নোটিস এখনও পাননি বলে দাবি করেছেন অনুব্রত। ভোটের মুখে এই নোটিশ ঘিরে সরগরম জেলার রাজনীতি।
হঠাৎ আয়করের নোটিশ ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আয়কর দফতর সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলের সম্পত্তি এবং তাঁর আয়ের হিসেবে গরমিল রয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আসে অনুব্রত মন্ডলের বিরুদ্ধে। আয়কর দফতরের আধিকারিকদের কাছে এই রিপোর্ট আসে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় তদন্ত। তদন্তের স্বার্থেই বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাঁর কাছে আয়-ব্যয়ের হিসেব এবং আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ওই নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে তৃণমূল নেতাকে।
কিছুদিন আগে বীরভূমের ইলামবাজারে একটি সভা করেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখান থেকে তিনি অনুব্রত মণ্ডলের নাম না নিয়েই বলেছিলেন যে, বীরভূম তৃণমূল সুপারম্যান কয়লা, বালি পাচার করে অনেক টাকা কামিয়েছে। এবার তাঁকেও ছাড়া হবে না। শুভেন্দুর ওই মন্তব্যের পর অনুব্রত মণ্ডলকে আয়করের নোটিশ তৃণমূল নেতৃত্বকে ব্যাপক চিন্তার মধ্যে ফেলেছে।