মানুষের সেবা করার উপলক্ষ্য দেখিয়েই যে তারকারা মুড়ি-মুড়কির মতো রাজনীতির ময়দানে নাম লিখিয়েছিলেন, এখন করোনার সময় তাঁরা কোথায়? নেটমাধ্যমে ফোন নম্বর দেওয়া ভাইরাল পোস্টে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফোন এসেই চলেছে। গুণে গুণে দশ হাজার পার! ক্রমাগত ফোনের জ্বালার জেরবার তৃণমূলপ্রার্থী রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty)। সেই প্রেক্ষিতেই বেজায় চটে গিয়ে কাঠগড়ায় তুললেন বাম শিবিরকে। অভিযোগ, তাঁরাই নাকি তারকা প্রার্থীদের নাম-সহ ফোন নম্বরের তালিকা ফাঁস করে দিয়েছেন নেটমাধ্যমে। যার পরিণাম ভুগতে হচ্ছে এখন।
ঠিক কী হয়েছে? একুশের বিধানসভা ভোটের (West Bengal Assembly Election 2021) আগে যাঁরা সাধারণ মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতির ময়দানে নাম লিখিয়েছেন। কেউ গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিলেন, আবার কেউ বা নাম লিখিয়েছিলেন রাজ্যের শাসক শিবিরে, এবার তাঁদের ফোন নম্বরই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নেটমাধ্যমে। এক ফেসবুক পোস্টে সাফ লেখা, “যাঁরা যাঁরা মানুষের জন্য কাজ করবেন কিন্তু করে উঠতে পারছিলেন না বলে অনুযোগ করছিলেন, তাঁদের ফোন নম্বর-সহ সমস্ত ডিটেলস ছড়িয়ে দেওয়া হোক। এমন সুযোগ তো কেউ পাবেন না। বিপদে-আপদে তাঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করুন, দেখুন কেমন সাড়া পাওয়া যায়। তুলকালাম করে দিন।” সেই তালিকায় দেখা গেল রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, জুন মালিয়া, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়নী ঘোষ, কৌশানি মুখোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, বাবুল সুপ্রিয় এবং পার্নো মিত্রদের মতো তৃণমূল-বিজেপির (TMC-BJP) তারকা প্রার্থীদের নাম ও ফোন নম্বর। সেই প্রেক্ষিতেই রাজের ফোন ক্রমাগত বেজে চলেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মোবাইল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী।
ব্যারাকপুরের তৃণমূলপ্রার্থী রাজের দাবি, সিপিএমের (CPIM) কোনও সদস্যেরই কাজ এটা। বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে নাকি এমন খবর পেয়েছেন তিনি। বাম শিবিরকে একটা শিক্ষিত, রুচিশীল দল বলেই জেনে এসেছেন তিনি। তাঁরা কীভাবে এই কাজ করতে পারে? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি, তৃণমূলপ্রার্থীর অভিযোগ, “ইন্ডাস্ট্রির অনেকেও এমন কাজকে সমর্থন করছেন।” রাজের এক পোস্ট ঘিরেও এরপর সমস্যার হয়। যে কোনও কোভিড সমস্যায় রেড ভলান্টিয়ার্সদের সঙ্গে যোগাযোগ করার একটি পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ করোনাআক্রান্ত রোগীরা কোনও সমস্যায় পড়লেই বাম শিবিরের যুব সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, এমন পোস্ট দিয়েই জোর বিপাকে পড়েছিলেন তিনি। যদিও সেটি এখন ডিলিট করে দিয়েছেন তিনি।
পরিচালক ইন্দ্রাশীস আচার্যের ফেসবুকেও দেখা গিয়েছে প্রার্থীদের নম্বর-সহ ওই পোস্ট। তাতে আবার বিশেষ করে এও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে যে, বাবুল সুপ্রিয় ও পার্ণো মিত্র করোনায় আক্রান্ত, তাই আপাতত তাঁদের ছাড় দেওয়া হোক। মানুষের সেবা করার উপলক্ষ্য দেখিয়েই যে তারকারা মুড়ি-মুড়কির মতো রাজনীতির ময়দানে নাম লিখিয়েছিলেন, এখন করোনার সময় তাঁরা কোথায়? সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে এই পোস্টের মাধ্যমে। তবে কারণ যাই হোক না কেন, পরিচালক রাজ-সহ অন্যান্য তারকাপ্রার্থীরাও যে ফোনের ঠেলায় জেরবার হচ্ছেন, তার অভিযোগ ইতিমধ্যেই শোনা যাচ্ছে কান পাতলে। যদিও শেষমেশ ওই ফোন নম্বরের তালিকা দেওয়া ছবি ডিলিট করে দিয়েছেন ইন্দ্রাশীস।