বিজেপি তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অশ্বমেধের ঘোড়া পশ্চিমবঙ্গে স্তব্ধ করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী-শাহের কোনও মিথ পশ্চিমবঙ্গে কাজে লাগল না। পশ্চিমবঙ্গকে সোনার বাংলা বানানোর মোদী-শাহের ঘোষণাও বাংলার মানুষ মেনে নিলো না। এর ফলে রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার তৈরির মোদী-শাহের প্রতিশ্রুতিকে বাংলার মানুষ মান্যতা না দিয়ে বাংলার নিজের মেয়েকেই বাংলার মানুষ আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাজ্যের মসনদে বসাল।
কেন রাজ্যে বিজেপি-র এই পরাজয়? এর অনেকগুলি কারণ আছে। বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ফলের ট্রেন্ড দেখে বলেছেন, “বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর ভরসা রেখেছ। তাই বিজেপির এই ফল হয়েছে।” বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, “মানুষ আমাদের একটা ওয়ার্নিং দিল। আমাদের দেখতে হবে সোনার বাংলা বানানোর যে স্লোগান বিজেপি দিয়েছিল সেটা সব স্তরে পৌঁছলো কি না। নব্য বিজেপিকে আদি বিজেপিরা মেনে নিতে পেরেছেন কিনা সেটাও দেখতে হবে।” এদিকে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেছেন, “আমাদের প্রার্থী নির্বাচন ঠিক হয়েছে কি না সেটা দেখতে হবে। আমরা মানুষকে আমাদের কথা বোঝাতে পারিনি। বাংলায় এসে হিন্দিতে ভাষণ দেওয়াকে মানুষ হয়তো ভালোভাবে নেয়নি। আবার হতে পারে তৃণমূল ছেড়ে যারা বিজেপিতে এসেছে তাদের প্রার্থী করা বিজেপির কর্মীরা ভালো ভাবে নেয়নি।”
আমরা যদি দেখি তাহলে জানতে পারবো, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১২ দিনে রাজ্যে ১৫টি সভা করেছেন। অমিত শাহ ২৮ দিনে ৬২টি সভা বা রোড শো করেছেন। এর কোনও প্রভাব যে বাংলার নেতৃত্বে প্রভাব ফেলেনি সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল। কারণ প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিনে সরকার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সোনার বাংলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অমিত শাহ বলেছিলেন ২০০ আসন নিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে। এসব কোনও কাজে লাগলো না।
তবে বিজেপি-র একটি অংশ মনে করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিদি , ও দিদি বলে সুর করে বিভিন্ন সভায় ডেকেছেন সেটা মানুষ ভালো ভাবে নেয়নি। অমিত শাহের চাল চোরের সরকার আর নেই দরকার, বলাটাও রাজ্যের মানুষ ভালো ভাবে নেয়নি। বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে, বাংলার অধিকার বাঙালির কাছেই থাকুক, অন্য কারোর হাতে নয়।